West Bengal SSC Scam: সুপ্রিম কোর্টের রায়, ২৫,৭৫৩ নিয়োগ বাতিল

নিউজ ডেস্ক | BangaAkhbar.in

Supreme court verdict on West Bengal SSC Scam: ক্যালকাটা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্ট বড়ো ঝটকা দিলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার কে। ২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC)-এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষাকর্মী ও অশিক্ষক কর্মচারীর নিয়োগে চরম দুর্নীতি (West Bengal SSC Scam) প্রমাণিত হওয়ায় পুরো প্যানেল কে বরখাস্ত করে নতুন নিয়োগ এর নির্দেশ দিলো দেশের সর্বোচ আদালত। এই নির্দেশে চাকরি হারিয়ে আবার দেশের ২৬০০০ যুবক বেকারত্বের খাতায় নিজের নাম লিখালো। এই নির্দেশে চাকরি হারিয়ে অনেকে দিশেহারা হয়ে হয়ে গিয়েছে, বুঝতে পারছে না কি করবে, চাকরি দেখিয়ে নেয়া লোন কিভাবে পরিশোধ করবে? আবার উপর থেকে ২০১৬ থেকে আজ পর্যন্ত স্যালারি সুদ সহ কিভাবে ফেরত দেবে. এই নিয়ে সাত পাঁচ ভেবে চাকরি হারা পরিবারের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সুপ্রিম কোর্ট এর রায় নিয়ে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা ব্যানার্জী রাজ্য সচিবালয়ে এক জরুরি বৈঠকে জানান যে তিনি বিচার ব্যবস্থার প্রতি সম্মান জানালেও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই রায় মেনে নিতে পারছেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী বলেন যে, সুপ্রিম কোর্ট এর আদেশে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকরা যেনো একটি “বঞ্চিত শিক্ষক সমিতি” গঠন করেন। তিনি আরো নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্ট এর আদেশে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের পাশে তিনি আছেন এবং তিনি তাদের অভিযোগ শোনার জন্য ৭ এপ্রিল সময় নির্ধারণ করেছেন।

West Bengal SSC Scam: দুর্নীতির পটভূমি

২০১৬ সালে WBSSC-এর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ ওঠে যে, টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং মেধাতালিকা বদল করা হয়েছে। এই দুর্নীতি কেবলমাত্র অর্থ লেনদেনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপেও পরিচালিত হয়েছিল।

২০২২ সালে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই (CBI) ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) তদন্তে নামে এবং বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থসহ তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জিকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে উঠে আসে মেধাতালিকা বিকৃত, জাল সাক্ষাৎকার ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর মাধ্যমে নিয়োগ এর নামে চরম ভাবে ‘West Bengal SSC Scam’ এর দুর্নীতি চালানো হয়েছে।

West Bengal SSC Scam-এ জড়িত ব্যক্তিরা ও তাদের ভূমিকা

এই দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে একাধিক শিক্ষা কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা ও SSC কর্তৃপক্ষের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। তদন্তে উঠে এসেছে যে পরীক্ষার্থীদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল, মেধাতালিকায় পরিবর্তন এনে অযোগ্য প্রার্থীদের নাম তোলা হয়েছিল, এবং এমনকি সঠিক উত্তরপত্রও পাল্টে দেওয়া হয়েছিল।

তদন্ত চলাকালীন বিভিন্ন অভিযুক্তদের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ অর্থ, গয়না ও সম্পত্তির নথিপত্র পাওয়া যায়। রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা একাধিক ব্যক্তি এই দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী অর্পিতা মুখার্জির বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়, যা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন তোলে এবং ‘West Bengal SSC Scam for teachers recruitment’ দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়।

ঘটনার বিবরণ:

একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্তের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) অর্পিতা মুখার্জির বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযান চলাকালীন, গোয়েন্দারা নগদ কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেন, যা ব্যাগ ও আলমারিতে লুকানো ছিল। টাকার অঙ্ক এতটাই বিশাল ছিল যে তা গণনার জন্য ব্যাংকের বিশেষ দল ও মেশিন ব্যবহার করতে হয়।

অভিযোগ ও প্রতিক্রিয়া:

1. শিক্ষামন্ত্রীর জড়িত থাকার সন্দেহ: অর্পিতা মুখার্জি ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। উদ্ধারকৃত অর্থের সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির যোগসূত্র থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
2. রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া: বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই ঘটনাকে দুর্নীতির প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সরব হয়।
3. সামাজিক প্রতিক্রিয়া: সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ঘটনা ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির পরিবর্তে বিপুল পরিমাণ টাকা অবৈধভাবে লেনদেনের অভিযোগ সমাজের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
4. আইনি পদক্ষেপ: এই ঘটনার পর অর্পিতা মুখার্জিকে গ্রেফতার করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধেও তদন্ত প্রক্রিয়া জোরদার হয়।

প্রভাব:

• এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারে ব্যাপক অস্বস্তি তৈরি হয়।
• দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে জনসাধারণের মধ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়।
• কেন্দ্রীয় সংস্থা পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকটি স্থানে তল্লাশি চালায়, যার ফলে নতুন নতুন তথ্য সামনে আসে।

এই ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে চলা বড় ধরনের West Bengal SSC Scam কে জনসম্মুখে আনে এবং দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপকে আরও তীব্র করে তোলে।

West Bengal SSC Scam: সুপ্রিম কোর্টের রায় ও পর্যবেক্ষণ

1. ২৫,৭৫৩ নিয়োগ বাতিল: WBSSC-এর মাধ্যমে ২০১৬ সালে নিযুক্ত সমস্ত কর্মচারীর চাকরি বাতিল
   ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC) এর মাধ্যমে নিযুক্ত ২৫,৭৫৩ জন কর্মচারীর চাকরি দুর্নীতির অভিযোগে বাতিল করা হয়েছে। আদালতের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে এবং যোগ্য প্রার্থীদের উপেক্ষা করে অবৈধভাবে কিছু প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। ঘুষ, স্বজনপ্রীতি এবং জালিয়াতির মাধ্যমে একাধিক প্রার্থী চাকরির সুযোগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। আদালতের নির্দেশে এই অনিয়মের কারণে সমস্ত নিয়োগ বাতিল করে নতুনভাবে নিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই গণবাতিলের ফলে প্রচুর শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারী চাকরি হারান, যা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় বড়সড় প্রভাব ফেলে। চাকরি হারানো কর্মচারীরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন এবং পুনর্বিচারের দাবি তোলেন। বিরোধী দলগুলি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং সরকারের নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে। আদালতের রায় অনুযায়ী, নিয়োগ প্রক্রিয়ার এই অনিয়ম সংশোধন করা হবে এবং যোগ্য প্রার্থীদের ন্যায়বিচার দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ যাতে প্রভাবিত না হয়, সে জন্য দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ওঠে। এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় বড়সড় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
2. নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া: রাজ্য সরকারকে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ নিশ্চিত করার নির্দেশ
   রাজ্য সরকারকে আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম আর না ঘটে। আগের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ত্রুটি ও দুর্নীতি ঠেকানোর জন্য একটি নতুন নিয়োগ নীতি প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়োগ ব্যবস্থায় ডিজিটাল মনিটরিং, স্বচ্ছ মূল্যায়ন এবং মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি আরও কঠোর করা হবে যাতে কোনো অবৈধ সুপারিশ বা আর্থিক লেনদেনের সুযোগ না থাকে। নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে এবং প্রতিটি ধাপ যাচাই করার জন্য একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষক দল গঠন করার কথা বলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুসারে, এই নতুন নিয়োগ ব্যবস্থায় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি বা রাজনৈতিক প্রভাব পড়তে না পারে। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, সে জন্য সরকারকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের নতুন করে নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ পুনরুদ্ধার করতে হবে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সফল হলে ভবিষ্যতে শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সম্ভব হবে।
3. বেতন ফেরত দিতে হবে না: চাকরি বাতিল হলেও প্রাপ্ত বেতন ফেরত দিতে হবে না (Applicable for non-tainted candidates)
   আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে প্রশ্নাতীত ভাবে যাঁরা ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ বা ‘দাগী’ (Tainted), তাঁদের চাকরি বাতিলের সঙ্গে বেতনও ফেরত দিতে হবে। তবে, যেসব কর্মচারী দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন, কিন্তু অনিয়মের কারণে চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের প্রাপ্ত বেতন ফেরত দিতে হবে না। দীর্ঘদিন ধরে তারা কর্মরত ছিলেন এবং কাজ করেছেন, তাই তাদের আয়ের ওপর কোনো ফেরতযোগ্য চাপ সৃষ্টি করা হবে না। যদিও নিয়োগ অবৈধ ছিল, কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সেই জন্য তাদের প্রাপ্ত বেতন সম্পূর্ণ আইনসম্মত বলে ধরা হয়েছে। তবে, আদালত এটাও স্পষ্ট করেছে যে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্নীতিপূর্ণ নিয়োগ রোধ করতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব প্রার্থী সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চাকরিতে প্রবেশ করেছিলেন এবং যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তাদের ভবিষ্যতে সরকারি চাকরিতে নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মানবিক কারণে, যাতে কর্মচারীদের জীবনে অতিরিক্ত আর্থিক সংকট সৃষ্টি না হয়। বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, দোষীদের শাস্তি আরও কঠোর হওয়া উচিত ছিল। তবে, আইনি বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত কর্মচারীদের জন্য ন্যায়সঙ্গত এবং বাস্তবসম্মত। এই পদক্ষেপের ফলে বেকার হয়ে পড়া কর্মচারীদের অন্তত কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
4. প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ছাড়: মানবিক কারণে প্রতিবন্ধী কর্মীদের চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে
   আদালতের নির্দেশে মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রতিবন্ধী কর্মীদের চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আদালত রায় দিয়েছে যে, নিয়োগ বাতিল হলেও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (Divyangjan) কর্মীদের প্রতি সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিত। কারণ, তাদের চাকরি চলে গেলে নতুন করে কাজ খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে এবং তারা চরম আর্থিক সংকটে পড়তে পারেন। আদালতের মতে, এই কর্মচারীরা তাদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সৎভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তাদের জন্য বিশেষ বিবেচনা প্রয়োজন। রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে যে, এটি একটি মানবিক পদক্ষেপ যা সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি। প্রতিবন্ধী কর্মীদের চাকরি রক্ষা করার পাশাপাশি, তাদের কাজের পরিবেশ আরও উন্নত করার বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে তারা নিশ্চিতভাবে কর্মজীবনে স্থায়িত্ব পাবেন এবং ভবিষ্যতে আর্থিক অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হবেন না। শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী কর্মচারীদের এই বিশেষ ছাড় দেওয়ায় সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এসেছে। বিরোধী দলগুলিও এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে, কারণ এটি একটি ন্যায়সঙ্গত ও সহানুভূতিশীল সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার ও মানবিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, “West Bengal SSC Scam শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি চরম আঘাত। যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে, যা গণতন্ত্রের নীতির পরিপন্থী।”

SSC নিয়োগ দুর্নীতিতে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতিক্রিয়া

চাকরি হারিয়ে হাজার হাজার কর্মী ও তাদের পরিবার চরম হতাশায়। বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন অনেকে। অনেকেই চাকরি ফিরে পাওয়ার আশায় আদালতে আবেদন করার চিন্তা করছেন।

এক প্রভাবিত শিক্ষক বলেন, “আমি দীর্ঘদিন পর চাকরি পেয়েছিলাম, এখন আবার বেকার হয়ে গেলাম। কীভাবে সংসার চালাব?” অন্য এক প্রার্থী যিনি নিয়োগ তালিকায় ছিলেন না, তিনি বলেন, “আমার মেধা থাকার পরও আমি চাকরি পাইনি, আজ সত্যের জয় হল।”

West Bengal SSC Scam নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

মমতা ব্যানার্জির প্রতিক্রিয়া

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই রায়ের বিরোধিতা করে বলেন, “এটি বিজেপি ও বিরোধীদের ষড়যন্ত্র। হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।” রাজ্য সরকার নতুন আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

বিজেপির প্রতিক্রিয়া

বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “West Bengal SSC Scam (WBSSC Scam)-এর দায় রাজ্য সরকারের। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় সাফল্য। যেসব যোগ্য প্রার্থী বঞ্চিত হয়েছিলেন, তারা ন্যায়বিচার পেলেন।”

বাম ও কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া

সিপিআইএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, “এই সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। সাধারণ মানুষের টাকা লুট করা হয়েছে।” কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “এই দুর্নীতির সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”

West Bengal SSC Scam: ভবিষ্যৎ পরিণতি ও করণীয়

1. নতুন নিয়োগ পরীক্ষা: WBSSC নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে।
2. প্রভাবিত কর্মীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা: রাজ্য সরকার নতুন কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়েছে।
3. আইনি পর্যালোচনা: রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারে।
4. অভিযোগের তদন্ত চলবে: দুর্নীতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

West Bengal SSC Scam নিয়ে জনমত ও বিশেষজ্ঞদের মতামত

আইন বিশেষজ্ঞ হরিশ সালভে বলেন, “এটি ন্যায়বিচারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রায়। সরকারি চাকরির জন্য স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া থাকা উচিত।” তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, নিরপরাধ প্রার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা উচিত।

শিক্ষাবিদদের মতে, এই দুর্নীতি শুধুমাত্র শিক্ষাক্ষেত্রের নয়, বরং প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনাকেও প্রকাশ্যে এনেছে। তারা মনে করেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধ করতে আরও কঠোর নিয়ম প্রণয়ন করা দরকার।

সুপ্রিম কোর্টের এই রায় West Bengal SSC Scam (WBSSC)-এর দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ। তবে এই রায়ে চাকরি হারানো ব্যক্তিদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। একইসঙ্গে এই রায়ের ফলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে, যা ভবিষ্যতে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।

🌐 দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, পরীক্ষার আপডেট, স্কুল-কলেজ সংক্রান্ত তথ্যসহ নানা দরকারি আপডেট পেতে পড়ুন 👉 https://bangaakhbar.in